মাছের কাঁটা গলায় আটকে গেছে।

কথাটা বৌকে বলার পর সে বললো, “ আই ডোন্ট কেয়ার! ”

“ মানে কী? সাদা ভাত দাও আমাকে। ”

“ মানে মানে করবে না। আই ডোন্ট কেয়ার! "

সে খুব চালাকি করে মাছের লেজটা আমার পাতেই ফেলেছে! আবার বলছে আই ডোন্ট কেয়ার! বললাম, “ জগে তো পানি নাই। পানি নিয়ে আসো। "

“ জগে পানি আছে কী নাই। আই ডোন্ট কেয়ার! "

গলায় ব্যথা শুরু হয়ে গেছে আমার।

“ আরেহ আমি মারা যাবো তো! "

“ আই ডোন্ট কেয়ার! ”

রান্নাঘরে দৌড় দিলাম আমি। ভাত তো নাই! লাউয়ের তরকারি ছিলো তাও শেষ! পানি পান করে নিলাম। দুই লিটারের মতো পানি পান করার পরেও গলার কাঁটা নামেনি!

ঘরে মুড়ি পেলাম। মুড়ি খেতে লাগলাম না চিবিয়ে। অনেক কষ্টে গলার কাঁটা নামলো। চোখে পানি চলে এসেছিলো আমার ব্যথায়।

গোসলখানায় পানির শব্দ হচ্ছে। বৌ ঢুকেছে গোসল করতে। আমি বাইরে থেকে বিশেষ চাবিটা দিয়ে তালা মেরে দিলাম! অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন তাঁর গোসল শেষ হয়। প্রায় আধঘন্টা পরে ডাকলো, “ ঐ, কই তুমি? ”

আমি দরজার সামনে একটা চেয়ার এনে বসে আছি। ডাকে সারা দিলাম না। গলার স্বর আরো মধুর হলো।

“ জামাই, কই তুমি? ”

জামাই ডাকলে ডাকে সারা না দেওয়া অপরাধ। তাই বললাম, “ হ্যাঁ কী হইছে? "

“ বাথরুমের দরজা তো খুলছে না! "

“ আই ডোন্ট কেয়ার! "

“ মানে কী? তুমি কী বাইরে থেকে তালা মেরে দিছো? ”

“ বাথরুমের দরজা বাইরে থেকে তালা দেওয়া যায় না। তুমি জানো না? "

“ আমি বের হবো কীভাবে এখন? ”

“ আই ডোন্ট কেয়ার! ”

কিছুক্ষণ কোনো শব্দ শুনতে পেলাম না। সে আবার বললো, “ কিছু একটা করো। আমি বাথরুমের ভেতরে মারা যাবো তো! "

“ আই ডোন্ট কেয়ার! ”

সে দেখলাম ধুম দরজায় লাথি উস্টা দিয়ে দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করছে। কিন্তু পারছে না। না পারার ফলে কান্না করছে!

“ দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার ! ”

“ আই ডোন্ট কেয়ার! ”

“ আমি মারা গেলে তুমি একলা একলা থাকতে পারবে? কষ্ট হবে না? ”

এসব আবেগি কথাবার্তা বলে আমাকে ভুলানোর চেষ্টা করে কোনো লাভ নাই!

“ তোমার পা টিপে দিবো। একটা কিছু করো না। আমার তো ভয় লাগছে! ”

“ আই ডোন্ট কেয়ার! ”

চার পাঁচ ঘন্টা পেরিয়ে গেলো। দরজা ভাঙ্গার অনেক চেষ্টা করেও যখন পারলো না। অবশেষে অসহায় কণ্ঠ।

আমাকে মাফ করে দাও। আর কোনোদিনও আই ডোন্ট কেয়ার বলবো না! ”

“ কান ধরো! ”

“ ধরছি! ”

“ আমি দেখতে পাচ্ছি না। ”

“ দরজা খুললে না দেখতে পাবে! ”

তাও কথা। দরজা না খুললো দেখবো কীভাবে? দরজা খুলে দিলাম! ওমা, দরজা খুলে দেওয়ার পরে কান ধরার কোনো পাত্তাই নাই! সে হনহন করে সামনে দিয়ে বেরিয়ে গেলো!

“ কী ব্যাপার? কান ধরছো না কেনো? ”

“ কানে ধরবো কেনো? ”

“ একটু আগেই না বন্দী অবস্থায় বললে কান ধরবে! ”

“ মুক্তি পাওয়ার জন্য একশো একটা মিথ্যা কথা বলা যায়! ”

Post a Comment